৫ মাস আগে মারা যান শ্যামনগরের ভুরুলিয়া ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামের ফারুক হোসেন (৩৫)। দুটি কিডনি বিকল হয়ে চিকিৎসার অভাবে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে এবং বৃদ্ধ পিতা-মাতা রেখে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভ্যান চালিয়ে, দিন মুজুর খেটে সংসার নির্বাহ ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটির মৃত্যুর পর থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে এই পরিবারটি। দুই সন্তানের লালন পালন ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মৃত ফারুক হোসেনের স্ত্রী মারুফা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর চেয়ারম্যান- মেম্বারদের কাছে বারবার গিয়েও কোন সরকারি সহোযোগীতা পাননি। স্বামীহারা মারুফা বলেন, আমার বাবা-মা খুব গরীব। বাবার বাড়ির থেকে টাকা পয়সা এনে কোন রকমে দুটি ছেলেমেয়ে নিয়ে বেঁচে আছি। মারুফা বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি সরকারি কোন সাহায্য সহোযোগীতা দিত, তাহলে শিশুসন্তানদের নিয়ে একটু ভালভাবে বাঁচতে পারতাম। স্বামী মারা যাওয়ার পর সন্তান দুটি নিয়ে খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। মৃত ফারুক হোসেনের মেয়ে মোছা. ফারহানা খাতুন (১১) এবং ছেলে মারুফ বিল্লাহ্ (৮)। শিশু বসয়েই বাবাকে হারিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। যাদের দু মুঠো খাবার জোগাড় করতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে সেখানে তাদের পক্ষে স্কুলের ফিস জোগাড় করা অসম্ভব। তবুও তারা পড়তে চায়, বাবার স্বপ্ন পুরন করতে চায়। মারুফার বৃদ্ধ শ্বশুর গোলাম রাব্বানী জানান, আমার বয়স হয়ে গেছে খাটাখাটনি করতে পারিনা। ছেলেটা মারা যাবার পর আমরা খুব অসহায় অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন যাপন করছি। ফারুকের মেয়েটা সিরাজপুর স্কুল এন্ড কলেজে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ছেলেটা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সমাজের বৃৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে ফারুকের এতিম বাচ্চা দুটি লেখাপড়া শিখতে পারতো।